স্কিন ক্যান্সার: স্কিন ক্যান্সারের সৃষ্টি হয় ত্বকের কোষগুলো সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির দ্বারা নষ্ট হওয়ার ফলে। ত্বকের ডার্মিসে কোলাজেন ও ইলাস্টিন তন্তু রয়েছে। কিন্তু সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মিগুলো ডার্মিসে প্রবেশ করে এসব তন্তুকে ধ্বংস করে দেয়।
বিশ্বে বর্তমানে একটি মারাত্মক ভয়ংকর ব্যাধি এটি। ২০১৫ সালের গবেষণার এক সমীকরনে দেখা যায় বিশ্বে স্কিন ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৫.৬মিলিয়ন যা খুবই আশ্চর্যজনক। ৯০% এর বেশি ক্ষেত্রে স্কিন ক্যান্সার সূর্য থেকে অতিবেগুনী রশ্মি বিকিরণের ফলে হয়ে থাকে
মূলত তিন ধরনের স্কিন ক্যান্সার হয়ে থাকে।যথা-
১. বেসাল সেল কার্সিনোমা
২.স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা
৩. মেলোনোমা (অত্যন্ত ক্ষতিকর)
বেসাল সেল কার্সিনোমা ও স্কোয়ামাস কার্সিনোমা মূলত ননমেলোনোমা ক্যান্সার হিসাবে পরিচিত যা অত্যন্ত সাধারণ ধরনের।
বেসাল সেল ক্যান্সার:
এটি খুবই ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় এবং চারপাশের টিস্যুর ক্ষতি করে কিন্তু দূরবর্তী টিস্যুর খুব একটা ক্ষতি করতে পারে না।
স্কোয়ামাস সেল ক্যান্সার:
এটি খুবই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং এটির মাথায় আঁশযুক্ত একটি শক্ত দলা দেখতে পাওয়া যায় যা পরবর্তীতে আলসার তৈরি করে।
মেলোনোমা ক্যান্সার:
এটি খুবই মারাত্মক।মেলোনোমা প্রথমে তিলের মতো আকৃতি ধারণ করে। এর কিছু দিন পর এটার রঙের পরিবর্তন দেখা যায় এবং ধীরে ধীরে চুলকানিতে পরিনত করে যার ফলে ঐ জায়গা থেকে রক্তক্ষরণ হতে থাকে।এভাবে একপর্যায়ে পচন ধরে এক পর্যায়ে জীবননাশ ও ঘটতে পারে।
যে ক্ষেত্রসমূহ স্কিন ক্যান্সার ঝুঁকিকে বাড়িয়ে দেয়-
১। অতিরিক্ত রোদে থাকলে।
২। চামড়ার রঙ পরিবর্তনের জন্য বাজারের বিভিন্ন অস্বাস্থ্যকর ক্রিম ব্যাবহার করলে।
৩। শোওয়ার ঘরে অতিরিক্ত পরিমাণ সূর্যরশ্মির প্রবেশ এর ফলে।
চিকিৎসা:
স্কিন ক্যান্সার এ আক্রান্ত হলে সার্জারী করতে হয়।তবে সাধারণ স্কিন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে রেডিওথেরাপির মাধ্যমে নিরাময় সম্ভব হয়।
সম্প্রতি স্কিন ক্যান্সারের মতো মারাত্বক রোগ নিরাময়ে আবিস্কার করেছে নতুন দুটি পথ্য। যুক্তরাষ্ট্রের সিকাগোতে অনুষ্ঠিত আমেরিকান সোসাইটি অব ক্লিনিক্যাল অনকোলোজির ক্যান্সার বিষয়ক এক বৈঠকে এ আবিস্কারের কথা জানানো হয়। বিশেষজ্ঞরা ক্যান্সার নিরাময় ঔষধের একটির নাম দিয়েছেন ভেমুরাফেনিব অন্যটি আইপিলিমুমাব।
যেসব স্কিন ক্যান্সার রোগীরা অতি মাত্রায় আক্রন্ত তারাও নতুন এ দুটি চিকিৎসার মাধ্যমে উপকৃত হবেন, যা তাদের নতুন করে বেচেঁ থাকতে সাহায্য করবে।এদিকে, গবেষণা চলাকালীন সময়ে এদের ৮৪ শতাংশ রোগীকে ভেমুরাফেনিব পিল দিনে দুই বার দেওয়া হয়। যাদের আয়ু বেড়েছে ৬ মাস। এটি কেমোথেরাপি প্রয়োগকৃত ৬৪ ভাগ রোগীর সঙ্গে মানের তুলনা।
আইপিলিমুমাব নামক ঔষধটি শিরার অভ্যন্তরে ব্যবহার করতে হয়।ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞরা মেলেনোমা রোগীদের সবাইকে ভারমুরেফেনিব চিকিৎসার আওতায় নিয়েছিল। এছাড়াও ফলাফলনুযায়ী এটি কেমোথেরাপির চেয়েও ৭৪ ভাগ ঝুকি কমাতে সক্ষম।
বিশেষজ্ঞদের চালানো গবেষণা ও মতামতের ভিত্তিতে এটাই প্রমানিত, মেলেনোমা নামক ক্যান্সার রোগীদের জন্য মুক্তির বার্তা নিয়ে আসবে।
লেখকঃ মোঃ হাসিবুল হাসান
৩য় বর্ষ-১ম সেমিস্টার,
ফার্মেসী ৬ষ্ঠ ব্যাচ, মাভাবিপ্রবি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।